ভোলার বোরহানউদ্দিনে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ায় আমন ধান ও শীতকালীন বিভিন্ন রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা ৷ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকদিনের টানা অসময়ের বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে আমন ধানের ক্ষেত গুলো ৷ এবং মাটিতে নুয়ে পড়েছে অধিকাংশ আমন ধানের গাছ । নুয়ে পড়া গাছগুলোর নিচেই জমে আছে বৃষ্টির পানি ৷ যার ফলে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে জানান কৃষকরা ৷
এছাড়া শীতকালীন সবজির মধ্যে বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, মুলা, বেগুন, কাঁচা মরিচ, লালশাক, ধনেপাতাসহ বিভিন্ন ধরনের রবি ফসলের ক্ষেতেও জমে আছে বৃষ্টির পানি ৷ বৃষ্টির পানি সরানো না গেলে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে বলে জানান কৃষকরা। সাচড়া ইউনিয়নের বাথান বাড়ী গ্রামের কৃষক শাফিজল হক জানায়, আমি ৫ একর জমিতে আমান ধান চাষ করেছি ৷ বৃষ্টির কারনে পানিতে নুয়ে পড়েছে ৷ অনেক ধান গাছ থেকে ঝড়ে গেছে ৷ তিনি আরো জানান, বৃষ্টি শুরুর আগের দিন আমি ৪০ শতাংশ জমিতে আলুর বীজ ও ২৪ শতাংশ জমিতে সরিষার বীজ বপন করেছি বৃষ্টির কারনে তা নষ্ট হয়ে গেছে ৷
একই গ্রামের আমন চাষি ইউসুফ কাজি, দেউলা গ্রামের মফিজল, আলমগীর , ইউনুছ এবং বড় মানিকা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের কৃষক মালেক, এছহাক আলী ও রেশাদ আলী জানান, ধান ঘরে তোলার আগে এমন বৃষ্টি ও বাতাস হওয়ায় অনেক ধান ঝড়ে গেছে ৷ এবং পানিতে নুয়ে গেছে ৷ ফলন ভালো হলেও এখন অনেক ধান নষ্ট হয়ে গেছে ৷ তাই আমরা লোকসানের মুখে পরবো ৷
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র আরো জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার প্রায় ১৮ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৫ হাজার ৫ শত হেক্টর জমিতে উপশী এবং ২ হাজার ৯শত হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের আমন আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ব্রি ধান ৫২, ৭৬ বিনা ধান-১৭, ২০ এবং স্থানীয় কার্তিক সাইল, মধুমালতি, সাদা মোটা, সাদা চিকন, রাজাসাইল ধানের চাষ হয়েছে বলে জানান তারা ৷
বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারক জানান, এবারের মৌসুমে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা সম্পন্ন হয়েছে ৷ এবং ফলন অনেক ভালো হয়েছে ৷ তবে ধান ঘরে তোলার আগে ঝড় বৃষ্টিতে কিছু কিছু জায়গায় আমন ধান ও শীতকালীন রবি শস্যের ক্ষতি হয়েছে ৷ আমরা মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের খোঁজখবর নিচ্ছি ৷