কচুও যে চাষ করতে হয়, সেটা জেনেছি অনেক পরে। বাড়ির আশপাশে, জমির আইলে প্রচুর কচু এমনিতেই পাওয়া যেতো। গ্রামবাসী খবু সহজেই বিনামূল্যে কচুর লতি বাড়ির আশপাশ থেকেই সংগ্রহ করে রান্না করে ফেলতে পারতেন। কিন্তু শিশুদের কাছে এই লতি ছিলো খুব অপছন্দের। অনেকসময়ই লতি খেলে গলায় ধরতো, চুলকানি হতো।
শিশুদের এই লতি খাওয়ানোর একটা বুদ্ধি ছিলো বড়দের। ‘যারা সত্য বলে- লতি খেলে তাদের গলায় ধরে না! তবে যারা মিথ্যা বলে- তাদের চুলকানি হবেই!- এটা তাঁরা আমাদের ছোটদের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। ছোটখাট মিথ্যা তো আমরা বলতামই! ফলে সেই মিথ্যা ধরা পড়ে যাওয়ার আশংকায় লতি খাওয়ার সময় গলায় চুলকাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে, মুখ নিচু করেই বলতাম, ‘নাহ! ধরতো ক্যারে?!’ গলায় অস্বস্তি, চোখ ভেজা- কিন্তু মুখ আর কষ্ঠ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা!
এই সময়ে, এই সমাজে, রাষ্ট্রে আমদের জন্য অনেক কঢ়ুর লতি ঝুলানো আছে। অনেক কিছুতে অস্বস্তি হলেও, মনে-মননে-মগজে-বিবেকে আর্তনাদ থাকলেও, হাসি মুখ নিয়ে বলতে বাধ্য হই- বাহ! কী সুন্দর সবকিছু!! স্যামনে ঝুলানো হুমকির ভয়ে-শংকায়-আশংকায় আমাদের মুখ বন্ধ!