শেখ আসাদ, নির্বাহী পরিচালক, উদয়ন বাংলাদেশ. বাগেরহাটঃ
জন্মের তিন দিন পরে মারা যায় সখিনার বাবা, অভাবের সংসারে একমাত্র কন্যা সন্তানকে বুকে ধারন করে অন্যের বাড়ীতে ঝি এর কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করেন সখিনার সুন্দরী মা।
বিভিন্ন স্থান থেকে তার বিয়ার প্রস্তাব আসে, প্রত্যাখান করেন তিনি। তার একমাত্র সন্তান লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হবে তখন তার আর কোন কষ্ট হবে না অনেক আশা তার।২২ বছর বয়সে কলেজের সবচেয়ে মেধাবী সুশ্রী মেয়ে সখিনা প্রেমে পরে পার্শ্ববর্তী গ্রামের শিল্পপতির একমাত্র সন্তানের, গ্রামবাসী চাঁদা তুলে ধুমধাম করে বিয়ের ব্যবস্থা করে। বিবাহের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর কনে হেঁটে যাচ্ছিলো হাত ধরাধরি করে, গর্বে বুকটা ভরে গেল সখিনার মায়ের, যতদুর দু চোখ যায় অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো এই বিধবা রমনী।
হঠাৎ বেহুশ হয়ে যান তিনি, যখন তার হুশ হয় সবাই তাকে সান্তনা দেয় ওখানে তোমার মেয়ে অনেক ভালো থাকবে আরো অনেক কিছু, চোখের পানি মুছতে মুছতে সখিনার মা স্মৃতি চারন করে বললেন, অনেক অজানা তথ্য, এবং বললেন ২২ বছর যাকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি শত প্রতিকুলতা সত্বেও যাকে বাবার অভাব বুঝতে দেইনি, আজ আমার সেই নারী ছেঁড়া ধন চলে গেল ও সুখে থাকবে এটা আমার সারাজীবনের প্রত্যাশা, কিন্তু আফসোস একটিবার মাত্র একটিবার ও পিছনে ফিরে তাকালো না, জনম দুঃখী মায়ের কথা একটি বারও মনে পরলোনা ওর এটাই কষ্টের! জীবন যৌবন, সুখ শান্তি, চাওয়া পাওয়া সবকিছু বিসর্জন দিয়ে আমি ওকে বড় করেছি লেখাপড়া শিখিয়েছি, সুখের নাগাল পেয়ে ও এভাবে ভুলে যাবে আমি তা কল্পনাও করতে পারিনি।আসলে বন্ধুরা দিন শেষে আপনিই আপনার আপন। বাকী সব মিথ্যা।