পারভীন আক্তার, ভোলা:
ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার নুরাবাদ ইউনিয়ন চরতোফাজ্জল গ্রামে স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় অমানবিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন লুৎফা নামের তিন সন্তানের জননী। বুধবার বিকালে ব্যাপক মারধর করে এক সন্তানসহ ঘর থেকে বের করে দেন পাষন্ড স্বামী। ঘটনার পর থেকে তিন সন্তানের ভবিষ্যত জীবনের নিশ্চয়তা নিয়ে হতাশায় রয়েছেন লুৎফা। লুৎফা চরতোফাজ্জল ০৩নং ওয়ার্ডের মোঃ শামসুদ্দিনের স্ত্রী এবং লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়ন ০৭নং ওয়ার্ডের কালা মিয়া জমাদারের মেয়ে। জানা যায়, লুৎফার সাথে শামসুদ্দিনের ২০১০ সালে বিয়ে হয়।
তাদের দাম্পত্য জীবনে দুইজন ছেলে ও একজন মেয়ে সন্তান জন্ম গ্রহন করে। বড় ছেলের নাম রিফাত হোসেন (৯), ছোট ছেলে রিহাদ (৩) ও মেয়ে সুমাইয়া (৫)। বিয়ের পর থেকে স্বামী বিভিন্ন মহিলাদের সাথে কথা বলেন বিষয়টি টেরপেয়ে লুৎফা প্রতিবাদ করলে একাধিকবার নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন স্বামীর হাতে। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারী) লুৎফা বার্তা বাজারকে জানান, তার স্বামী পেশায় একজন রিক্সা চালক। বিয়ের পর থেকে তার স্বামী শামসুদ্দিন বিভিন্ন সময় অন্যান্য মহিলাদের সাথে মোবাইলে কথা বলেন। এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে তার উপর চলতো নির্যাতন। বুধবার ৮ ফেব্রুয়ারী তার স্বামী ঘুমানো অবস্থায় স্বামীর মোবাইলে একটি কল আসে লুৎফা রিসিভ করেন।
ওপাশ থেকে একজন মহিলার কন্ঠ শুনতে পান। তখনো লুৎফা তার স্বামীকে কিছুই বলেনি। সারাদিন কেটে যায়। বিকালে লুৎফার স্বামী শামসুদ্দিন বাসায় এসে কোন কারন ছাড়াই লুৎফাকে ব্যাপক মারধর করে। যা মধ্যেযুগীয় নির্যাতনকেও হার মানায়। মারধরের পর ঘর থেকে বের করে দেয় স্বামী। নির্যাতনের স্বীকার লুৎফা এখন তার বাবার বাড়ীতে অবস্থানরত। এবং প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানায়। স্থানীয়রা জানান, মোজ্জাম্মেল মিন্টু বেপারীর ছেলে শামসুদ্দিন বহুদিন ধরে অন্য মহিলাদের সাথে মোবাইলে পরকিয়ায় আসক্ত।
বাড়ির লোকজন কিছু বললেই লাঞ্চিত অপমানিত হতে হয়। ভয়ে কেউ ভালোমন্দ বলার সাহস রাখে না। বুধবার তিনসন্তানের জননী লুৎফার উপর যে অমানবিক নির্যাতন তা জাহেলিয়াত কে হার মানিয়েছেন। অভিযুক্ত শামসুদ্দিন নির্যাতনের কথা স্বীকার করে জানান, এভাবেই চলবে। আমার ঘরে ওর ঠাই হবে না। দুলার হাট থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোরাদ হোসেন জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।