রবিবার ২৭ নভেম্বর ২০২২,
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র (ডরপ) কর্তৃক রাজধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের পূর্বেই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের অঙ্গীকার” শীর্ষক জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ডরপ এর উপ-নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান এর সঞ্চালনায় সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ডর্প এর প্রেসিডেন্ট জনাব মো: আজহার আলী তালুকদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী জনাব ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনের যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।” তিনি আরও বলেন, “বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ই-সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।” এছাড়াও তিনি খসড়া সংশোধনীগুলো মূল সংশোধনীর ধারায় যুক্ত করার প্রক্রিয়ায় সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
ডর্প পক্ষ থেকে উপস্থাপনায় জানানো হয় খসড়া সংশোধনীর ৬টি ধারা যেমন- ১. ধূমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত; ২. বিক্রয়স্থলে তামাক পণ্য প্রদর্শন বন্ধ; ৩.তামাক কোম্পানির সিএসআর বন্ধ; ৪. প্যাকেটে/কৌটায় সচিত্র সতর্ক বার্তার আকার বৃদ্ধি; ৫.খুচরা শলাকা বিক্রয় নিষিদ্ধ; ৬.ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট নিষিদ্ধ; ইত্যাদি প্রস্তাবসমূহ মূল সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত হলে সাধারণ মানুষকে তামাকজনিত রোগের অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে এবং তামাক ব্যবহারজনিত স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমিয়ে আনতে বিশেষ অবদান রাখবে।
সেমিনারে বক্তারা জানান, সংশোধনী প্রস্তাবনা অনুসারে পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা হলে সেখানে আগত জনগণের হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং শ্বাসতন্ত্রের ঝুঁকি ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।
অন্যদিকে, বিক্রয় কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা হলে জনগণের মধ্যে বিশেষ করে কিশোর, তরুণ, নারী ও স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে এসব পণ্যের সহজলভ্যতা ও ব্যবহার হ্রাস পাবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এর সমন্বয়ক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব হোসেন আলী খোন্দকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী প্রস্তাবনাগুলোর ব্যাখ্যা করেন এবং এ বিষয়ে মাননীয় মন্ত্রীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতি এর সভাপতি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজুল হক বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংশোধনী প্রস্তাবনাগুলোকে সমর্থন ও আইনটি দ্রুত পাস করার আহবান জানান।
ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে), বাংলাদেশ-এর গ্রান্টস ম্যানেজার জনাব মোঃ আব্দুস সালাম মিঞা বলেন, “বর্তমান আইনটি সংশোধিত হলে ব্যবহারকারীদের মাঝে ধূমপানের প্রবণতা কমবে, কিশোর-তরুণরা নতুন করে ধূমপান শুরু করতে পারবে না এবং অধূমপায়ীরা পরোক্ষ ধূমপানের স্বাস্থ্যক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে।”
উল্লেখ্য, উক্ত সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক, সুশীল সমাজের সদস্যবৃন্দ, বিড়ি শ্রমিক ও নেতা এবং যুব ফোরামের সদস্যবৃন্দ। তারা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নেন এবং মন্ত্রী মহোদয় ও সরকারি নীতি-নির্ধারকগণকে উক্ত প্রস্তাব সমূহকে সমর্থন ও আইনটি পাস করার ক্ষেত্রে সংসদ ও সংসদের বাইরে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার আহবান জানান।