1. admin@upokulbarta.news : admin :
  2. bangladesh@upokulbarta.news : যুগ্ম সম্পাদক : যুগ্ম সম্পাদক
  3. bholasadar@upokulbarta.news : বার্তা সম্পাদক : বার্তা সম্পাদক
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
আলিপুরে বিভিন্ন স্থানে মটর সাইকেল প্রতিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়াউল ইসলাম জিয়ার গণসংযোগ… সাতক্ষীরায় অগ্নিবীনার উদ্যোগে নজরুল সম্মিলন ভোটে অংশ নেওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রউফ বহিষ্কার রামপালে গলায় ফাঁস দিয়ে কলেজ ছাত্রের আত্মহত্যা রামপালে গাঁজাসহ যুবক আটক ফরিদপুরে মুসলিম শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে ভোলায় প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত খানপুর মেইনরোডে মাদক ব্যবসা জমজমাট ॥ পুলিশ নিরব বৃষ্টির প্রত্যাশায় ভোলায় ইস্তেস্কা নামাজ আদায় কক্সবাজারের জেলে পরিবারের নারীদের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার করন সভা অনুষ্ঠিত

প্রত্যাবাসন বিরোধীদের বাধার মুখেই ‘গো হোম’ কর্মসূচি পালন

যুগ্ম সম্পাদকঃ
  • আপডেট সময় : রবিবার, ১৯ জুন, ২০২২
  • ১৩০ বার পঠিত

ইমাম খাইর, কক্সবাজার ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস। তার একদিন আগে রবিবার (১৯ জুন)‘চলো চলো আরাকান চলো’ শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবির। প্রাপ্য অধিকারসহ স্বেচ্ছায় নিজ দেশ মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্যে ফিরতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে রোহিঙ্গারা।

বিক্ষোভে সবার হাতে ছিল ‘গো হোম’ প্ল্যাকার্ড, ব্যানার। বস্তির বাইরে এসে কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করে। বৃষ্টি-বাদলের দিনেও থামাতে পারেনি রোহিঙ্গাদের মানববন্ধন-বিক্ষোভ সমাবেশ।

প্রত্যাবাসন বিরোধীচক্রের বাধার মুখেই ‘গো হোম’ কর্মসূচি পালন করেছে রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দ্রুত নিজ দেশে ফিরে যেতে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে সমাবেশ করেছেন রোহিঙ্গারা। রবিবার সকাল ১১টায় উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে বৃষ্টি উপেক্ষা করে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকে বিভিন্ন ব্লক থেকে ‘গো হোম ব্যানার নিয়ে সমাবেশে অংশ নেয় লাখো রোহিঙ্গা।

পূর্বনির্ধারিত সমাবেশে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পাশাপাশি থানা পুলিশে সদস্যরা মোতায়েন ছিল। লম্বাশিয়া অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) সংগঠনের সদস্য মাস্টার নুরুল আমিন, রোহিঙ্গা নেতা মৌলানা নুর হোসেন, মাস্টার ইউছুপ, মাস্টার কামাল, ডা. জুবাইর এবং মুফতি আব্দুর রহিম। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণ আমাদেরকে আশ্রয় দিয়ে যে মানবিক পরিচয় দিয়েছে তার জন্যে আমরা কৃতজ্ঞতা (শোকরিয়া) জানাচ্ছি। আমরা গত ৫ বছর এখানে অনেক ভালো আছি, কিন্তু এটি আমাদের দেশ নয়, তাই দ্রুত নিরাপদ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই। তারা আরো বলেন, বিশ্ববাসীর কাছে দাবি জানাচ্ছি, আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে স্বদেশে ফিরে যেতে সহায়তা করুন।

১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি মো. নাইমুল হক জানান, পৃথকভাবে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য এপিবিএন পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একসঙ্গে পৃথক পৃথক স্থানে কয়েকটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গণহত্যার বিচার, দ্রুত প্রত্যাবাসনসহ ১৯টি দাবি তুলে ধরেন রোহিঙ্গারা। তবে এসব কর্মসূচির পেছনে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা, কোন এনজিও সংস্থা বা অন্য কেউ জড়িত আছে কি না তা এখনো স্পষ্ট করা হয়নি। নাম সর্বস্ব একটি ব্যানারে এত গুলো ক্যাম্পে হঠাৎ এ ধরনের কর্মসূচির রহস্যেরও জন্ম দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের সমাবেশের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কিনা তা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার ও সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করে নি ।

রোহিঙ্গাদের ‘গো হোম’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া লাখো নারী-পুরুষের মুখে একটি আওয়াজ ছিল- এবারের বিশ্ব শরণার্থী দিবসেই আমাদের শরণার্থী জীবনের অবসান হওয়া চাই। রোহিঙ্গারা এ আয়োজনে নানা প্ল্যাকার্ড বহন করেছেন বিশ্ব বিবেকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। তাতে তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট রাইটস, উই ওয়ান্ট টু গো ব্যাক টু আওয়ার মাদারল্যান্ড’সহ আরো অনেক দাবি ছিল প্ল্যাকার্ডে। এর আগে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ক্যাম্পে প্রথমবারের মতো বড় সমাবেশে নেতৃত্ব দেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস প্রধান মাস্টার মুহিবুল্লাহ। গত ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তের গুলিতে তিনি নিহত হন। কিন্তু এবারের সমাবেশে কারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা গোপন রাখছে রোহিঙ্গারা। ইতোমধ্যে “আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ)” সংগঠনের লোগো লাগানো ১৯টি দাবি উল্লেখ করে একটি লিফলেট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যাতে রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা বলেই ডাকা, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে আরাকানের গ্রামে গ্রামে প্রত্যাবাসন, প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত প্রত্যেক চুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, বাংলাদেশ, এনজিও, সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা, মিয়ানমারের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, সম্পত্তি ফেরত, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারসহ ইত্যাদি দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। প্রচারপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ” আরাকানের সাথে আমাদের মিল, এটিই আমাদের মাতৃভূমি।” তবে এই লিফলেট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন বলে জানিয়েছেন এআরএসপিএইচ মুখপাত্র মোহাম্মদ। তাহলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সংঘবদ্ধভাবে কারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন বা তাদের পেছনে কারা? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র।

প্রচারপত্রে আয়োজক হিসেবে ‘নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী’ লেখা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের এ ধরনের কর্মসূচি বিষয়ে অবগত রয়েছেন জানিয়ে ৮ এপিবিন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. কামরান হোসেন বলেন, রোহিঙ্গারা তাদের অধিকারের কথা বলুক। তবে সব ধরনের কর্মসূচি যথাযথভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের বাধা দিয়ে আসছে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী বাহিনী।

এ কারণে শিবিরগুলো দেশে ফিরতে ইচ্ছুক এবং ফিরতে বাধাদানকারী- এ দুই বিবাদমান গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদে এখানে রেখে আঁখের গোছানোর নেপথ্যে কাজ করছে আন্তর্জাতিক কিছু সংস্থার কর্মী। সেইসঙ্গে দেশি-বিদেশি এনজিওকর্মীদের বিরুদ্ধেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন খোদ সাধারণ রোহিঙ্গারাই।

‘গো হোম’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের অনেকেই বলেছেন, দেশি-বিদেশি ইন্ধন না থাকলে অনেক আগেই আশ্রিত রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়িত হতো। উখিয়ার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝি মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘আমরা নিরাপদ প্রত্যাবাসন চাই। রোহিঙ্গাদের যৌক্তিক দাবিগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গুরুত্ব পাবে বলে আশা করছি।’ রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জাফর বলেন, স্বদেশে ফিরতে বাধাদানকারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের প্রচণ্ড চাপ উপেক্ষা করেই আমরা আজকের ‘গো হোম’ কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা সন্ত্রাসী আর অস্ত্রকে ভয় পাই না। ফিরতে চাই বাপ-দাদার ঐতিহ্যবাহি বাড়িভিটায়। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে নতুন করে পালিয়ে আসে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা। সরকারি হিসেবে যাদের সংখ্যা এখন ১১ লাখেরও বেশি।

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা