ভোলা প্রতিনিধিঃ

ভোলা সদর উপজেলা কমপ্লেক্সের পেছনে পাখির পোল নামক এলাকায় সরকারি খাল দখল করে তিন তলা পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুস সালাম হাজী বিরুদ্ধে । প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সমাজের গণ্যমান্য কাউকে  না বলে তার ক্ষমতা দেখিয়ে ঐ পৌর এলাকার পানি নিষ্কাশনের অন্য তম মাধ্যম সরকারি খালটি দখল করে সেই খালের উপর পাকা ভবন নির্মাণ করচ্ছেন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোলা সদর উপজেলা পরিষদের পাশে পৌর ১ নং ওয়ার্ডের পাখির পোল ব্রিজ সংলগ্ন সরকারি খালের উপর আরসিসি পিলার দিয়ে এই দোকান ঘরটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই যার কাজ প্রায় অর্ধেক শেষ হয়েছে। বর্তমানে সেই ভবন নির্মাণের কাজ এখনো চলমান রয়েছে।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, ভবনটি নির্মিত হলে বর্ষাকালে এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যহত হবে। মূল সড়কের পাশেই খালটি অবস্থিত হ‌ওয়ায় সড়কের পাশে অবস্থিত ইট এর থেকে খালের বেশ কিছু অংশ মাটি দিয়ে ভরাট করে নিয়েছে প্রভাবশালী আব্দুস সালাম হাজী। এছাড়াও খালের ভিতরে পিলার দিয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এভাবে পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম খালটি দখল করে ভবন নির্মান করা হলে দিনে দিনে খালটি পুরো দখল হয়ে যাবে। যা পরবর্তীতে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এছাড়াও এই ভাবে খালটি দখলের ফলে পৌর এলাকার সৌন্দর্য ও এই খালটি তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলবে। পাখির পোল এলাকা ছাড়াও ধনিয়া ইউনিয়নের কৃষকদের চাষাবাদের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম এই খালটি। যদি এই খালটি আমরা রক্ষা করতে না পারি তাহলে দখলের কারনে খালটি এক সময় ময়লা আর্বজনায় পরিপূর্ন হয়ে মরে যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাখির পোল এলাকার একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে আরো বলেন, উপজেলার পাশে তিন রাস্তার মোড়ে ব্রিজের গোড়ায় সরকারি খালের উপর আরসিসি পিলার দিয়ে আব্দুস সালাম হাজী দোকান ঘরটি নির্মাণ করছেন। তিনি স্থানীয় ভাবে খুবই প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকাবাসী তাকে কিছু বলতে সাহস পাচ্ছেন না। খাল দখল করে এটি নির্মাণ করার ফলে বর্ষাকালে পানি নিষ্কাশনে ব্যাঘাত ঘটবে। যা পৌরবাসীকে চরম ভোগান্তিতে ফেলবে।

পৌর ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মামুস বলেন,সরকারি খাল দখল করে অবৈধ ভাবে আরসিসি পিলার দিয়ে দোকান ঘরটি নির্মাণ করার সময় আমি বাধা দিয়েছি। কিন্তু সালাম হাজী বাধা উপেক্ষা করেই দোকান নির্মাণ করছেন।

ভোলা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনজুরুল আলমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি জানতে পেরে আজ সকালে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে একটি ভবনের কাজ করা হচ্ছে। আজ শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকার কারণে অফিস থেকে কাউকে সেখানে পাঠাতে পারিনি,তবে আগামী কালকেই ‌পৌর কতৃপক্ষ সেখানে যাবে।

অভিযুক্ত সালাম হাজীর সাথে যোগাযোগ করতে ঘটনা স্থলে গেলে তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও তার দেখা না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ভোলা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আলী সুজা বলেন, আমি শুনার পর সেখানে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে কি ভাবে কাজ করছে কখন করছে আমি কিছুই জানি না। আমরা ঘটনাস্থলে আবারও যাব, সেখানে গিয়ে মেপে দেখবো কতটুকু খাল দখল করেছে সে। তারপর তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। সরকারি খাল কাউকে দখল করতে দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।