পটুয়াখালীঃ পটুয়াখালী টু ঢাকা নৌ রুটের সুন্দরবন লঞ্চের সুপারভাইজার আব্দুর রাজ্জাক হত্যার বিচারের দাবিতে পটুয়াখালী পৌরবাসী ব্যানারে প্রতিবাদ সভায় করে পটুয়াখালীর নাগরিকরা।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে পটুয়াখালী লঞ্চ টার্মিনালে রাজ্জাক হত্যার প্রতিবাদ ও হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে আয়োজিত সমাবেশ শহরের ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, রাজনৈতিক ও সকল শ্রেণীর পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় সেখানে বক্তব্য রাখেন পৌর কাউন্সিলর এস.এম ফারুক মৃধা, সাবেক পৌর কাউন্সিলর একে খায়রুল হাসান খায়ের, শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন আহমেদ, ঘাট ইজারাদার মো. জসিম উদ্দিন, ব্যবসায়ী সাইদ গাজী, আবু জাফর কিরণ,
রেজাউল করিম শোয়েব প্রমূখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, রাজ্জাক কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারী ইউনুস ও মশিউর দুজনে মিলে এই হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেন। কোনভাবে যেন এই হত্যাকারীরা বিচারের হাত থেকে রক্ষা না পায়। যতদিন পর্যন্ত রাজ্জাক হত্যার বিচার না হলে, আমরা পটুয়াখালীবাসী সুন্দরবন লঞ্চে উঠবো না।
সুন্দরবন লঞ্চের মালিক আলহাজ্ব সাইদুর রহমান রিন্টু মুঠোফোনে কে বলেন, একটি বাবার তার যেমন দুটি সন্তান থাকে তেমনি রাজ্জাক ও ইউনুস আমার সন্তানদের মতো। কাউকে ছোট করে বা অন্য একজনকে বড় করে দেখার সুযোগ নেই। আইনের গতি অনুসারে এর বিচার হবে এতে আমাদের কোন ধরনের হস্তক্ষেপ থাকবে না।
অপরদিকে রাজ্জাক হাওলাদার নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী মোসা. মিনারা আক্তার (৪২) বাদি হয়ে রোববার সকালে পটুয়াখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামী করা হয়েছে ওই লঞ্চের কেরানি মো. মশিউর রহমান ও ইন্সপেক্টর মো. ইউনুসকে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটককৃত এ দুই লঞ্চ স্টাফকে পরবর্তীতে গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়।
পটুয়াখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন,’এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে দুইজনকে আসামী করে একটি মামলা করেছেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটককৃত আসামী কেরানি মশিউর রহমান ওসুপারভাইজার মো. ইউনুসকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের নিজের বাসা পটুয়াখালী পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ডের সবুজবাগে এবং পৈত্রিক বাড়ি জেলার দুমকি উপজেলার মুরাদিয়া এলাকায়। রাজ্জাক ওই এলাকার মো. খোরশেদ হাওলাদারের বড় ছেলে এবং রাজ্জাকের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে এমভি সুন্দরবন-১৪ লঞ্চের সুপারভাইজার আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে কেরানি মশিউর রহমানের বাক-বিতন্ডা হয় ও হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে কেরানি মশিউরের কিল-ঘুষিতে রাজ্জাক অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।