টি আই অশ্রুঃ
পটুয়াখালী সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র ইমরানের সাথে কথা কাটাকাটির জেরে দোকানির ছুরির আঘাতে রক্তাক্ত হলেন নাঈম সিকদার (২৩) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী। শনিবার (২৮মে) পটুয়াখালী সরকারি কলেজ গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত নাঈম গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের নাজির সিকদারের ছেলে। সে পটুয়াখালী সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী নাঈম বলেন, আমাদের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা চলছে।
প্র্যাকটিক্যাল খাতার কভার পেইজ আনার জন্য কলেজের সামনে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ফটোকপির দোকানে যাই। সেখানে কলেজ কম্পিউটার নামের একটি ফটোকপির দোকানে কভার পেইজের ডিজাইনটা ছিলো। স্যাররা ডিজাইনটি ওখানে রেখেছে যাতে প্রয়োজনে সবাই একই জায়গা থেকে এটি নিতে পারে। আমরা কয়েকজন বন্ধুরা প্র্যাকটিক্যাল কাজের জন্য একত্রে কলেজের সামনে তাই। তার ভিতরে আমি আর আমার ইমরান নামের এক বন্ধু ওই দোকানটাতে যাই। আর বাকি বন্ধুরা প্র্যাকটিক্যাল খাতার অন্যান্য কাজের জন্য পাশের আরেকটি দোকানে যায়। আমরা দোকানে যাওয়ার পরে প্র্যাকটিক্যাল খাতার কভার পেইজের ডিজাইনের কয়েকটা কপি চাই দোকানদারের কাছে। তখন হঠাৎ করে দোকানদার হাসান বলে এখন কোনো কিছু দিতে পারবো না। এরপর আমার বন্ধু ইমরান তাকে বলে আপনার দোকানে ডিজাইন টা রাখা আছে। স্যারেরা আমাদের খাতা জমা দিতে বলছে। আপনি কেনো দিবেন না।
এই কথা বলার পরেই দোকানে থাকা হাসান কাগজ কাটার একটা ছুরি নিয়ে আমার বন্ধুর দিকে তেড়ে যায়। আমি দেখে সাথে সাথে হাসানকে ধরে বসি। ও তার হাতে থাকা ছুরিটা মাঝখান থেকে ভেঙে ফেলি। এরপরেই হাসান আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে ভাঙা ছুরিটা দিয়েই আমার গালে, হাতে ও পেটে আঘাত করে। আহত নাঈমের সাথে থাকা ইমরান জানান, আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি নাঈমের সারা শরীর রক্তে ভিজে গেছে। আমি ও আরো কয়েকজন মিলে তাকে সাথে সাথে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। কলেজ কম্পিউটার দোকানের মালিক ও সরকারি কলেজের কম্পিউটার অপারেটর রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ি চর বিশ্বাস, আমি সরকারি কলেজে বেসরকারি ভাবে কম্পিউটার অপারেটরের চাকরি করি। পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে কলেজের সামনে ছবি তোলা ফটোকপি করা ও কম্পিউটার কম্পোজের ব্যাবসা শুরু করি। আমার দোকানের কর্মচারী হাসান আমার একই এলাকার। তাই তাকে আমার দোকানে চাকরি দেই ।
হাসান যে কাজ করেছে তার শাস্তি তাকে ভোগ করতে হবে। ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। আমি ঘটনা শুনে আহত নাঈমের ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য হাসপাতাল যাই। কিন্তু এদিকে ছেলেরা এসে আমার দোকান-পাট ভেঙে চুরমার করে ফেলে। এতে আমার প্রায় দশ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়ে গেছে। অভিযুক্ত হাসান গাজী(২৫) চরবিশ্বাস ইউনিয়নের কালা গাজীর ছেলে। পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, ঘটনা ঘটার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ অভিযুক্ত হাসানকে আটক করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।