পটুয়াখালীর গলাচিপা থানায় অবস্থিত বিচ্ছিন্ন একটি ইউনিয়ন চরবিশ্বাস। ইউনিয়নটির বিচ্ছিন্ন আর একটি অংশের নাম বাংলার চর। থানা সদর হতে ৩০ কি:মি: দুরে চরটির অবস্থান। পুর্ব ও উত্তরে তেতুলিয়া নদী, দক্ষিণে চর মন্তাজ পশ্চিমে চর বিশ্বাস। চরটির সাথে থানা সদরের যেতে হলে দুইটি নদী পার হতে হয় যোগাযোগে সময় লাগে ৪ ঘন্টা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ,দু:খ-দারিদ্র্য,ক্ষুধা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির ইউনিয়নয়ের সন্তান ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরু। ১৭০০ একর ভূমির চরটিতে বসবাস শুরু হয় ১৯৯৪ সালে।
বাউফল, দশমিনা, চরকাজল ও চর বিশ্বাস সহ বিভিন্ন চর হতে ভুমিহীন লোকজন বসতি স্থাপন করে এই চরে। ৩৫০ পরিবারের চরটিতে রয়েছে একটি মাত্র সরকারী প্রাইমারী স্কুল। ২০০৭ সালে বেসরকারী ভাবে শুরু হওয়া বিদ্যালয়টি থেকে গত বছর ২৫ জন ছাত্র প্রাথমিক সম্পন্ন করলেও চরটিতে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় অনেক ছাত্রই অকালে ঝড়ে পড়ে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আল আমিন জানান, এ বিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে এ যাবৎ ২৫ জন এসএসসি, ১৩ জন এইএসসি এবং ২ জন ডিগ্রী পাশ করেন। মৎস্য আহরন করে এখানকার লোকজন জীবিকা নির্বাহ করে। ধান, তরমুজ, বাদাম এই চরের অর্থকারী ফসল। চরটিতে বেড়ীবাঁধ না থাকায় আমবস্যা ও পূর্ণিমার স্বাভাবিক জোয়াড়ে ফসলি জমি তলিয়ে যায়। দুই হাজার পাঁচশত লোকের বসবাস চরটিতে রয়েছে একটি মাত্র সাইক্লোন সেল্টার। দুই জন ধাত্রী দ্বারা চলে গর্ভ-প্রসবের মত ঝুঁকি পূর্ণ সেবা। নেই কোন কমিউনিটি ক্লিনিক বা স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো নদীর গর্ভে জেগে উঠা এই চরে ভূমিহীন পরিবারগুলোর বসতভিটার এখনো হয়নি কোন আইনি বন্দোবস্ত। দখলদারদের মামলায় মাথা গুজার ঠাঁইটুকু এখনও অনিশ্চয়তায়। পদ্মা সেতু, মেট্টোরেল, ফ্লাইওভার, এক্সপ্রেসওয়ে সহ অনেক মেঘা প্রকল্প চলমান যার কোন সুবিধাই ভোগ করতে পারবে না চরবাসী। মামলা নিরসনে স্থায়ী বসবাস, বেড়ীবাঁধ, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় চরবাসীর চাওয়া।