বাগেরহাটের ফকিরহাটে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সাবুল সরদার (৪২) নামের এক মৎস্য ব্যবসায়ী মারা গেছেন। এ নিয়ে ২৩ দিনে ফকিরহাটে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
সর্বশেষ সাবুল সরদার শুক্রবার সন্ধায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুলনার একটি ক্লিনিকে মারা যান। তিনি উপজলার আড়ুয়াডাঙ্গা গ্রামের ইসলাম গনি সরদারের ছেলে।
নিহতের পরিবার জানায়, সাবুল সরদার কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। তিনি বেশী অসুস্থ হয়ে পড়লে বুধবার সকালে পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষায় তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। সেখান থেকে তাকে খুলনা একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ওই ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
এর আগে ১৭ আগস্ট উপজেলার মৌভোগ গ্রামের শিরিনা বেগম (৩৮) নামে এক নারী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ও ২৮ আগস্ট উপজেলার কামটা গ্রামের পিয়ার আলী খাঁ (৪০) নামে এক দিনমুজুর ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
বর্তমানে ফকিরহাটে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। জুন মাস থেকে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ১৭৯ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া ফকিরহাট ও পার্শবর্তী খুলনার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্রায় অর্ধশত রোগী ভর্তি রয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইতোমধ্যে ৮জন রোগী পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক নার্স ও ডাক্তার ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে রোগী ও জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকায় বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘হাসপাতালে রিএজেন্ট কিটস না থাকায় সেবাপ্রার্থীদের বিভিন্ন ক্লিনিকে অধিক টাকা দিয়ে টেস্ট করাতে হচ্ছে। আমরা চাহিদা দিয়েছি। কিটস পেলে সরকারি মূল্যে রাগীদের ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে পারবো।’#