বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার লখপুর ইউনিয়নের ছোট-খাজুরা জাহাজঘাটা এলাকায় অবস্থিত পানি উন্নয়ন র্বোডের (পাউবো) নির্মাণকৃত বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে জাবুসা, ইলাইপুর, আন্দাবাজ ও খাজুরা বিলের প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমির রোপা আমন ধান লবন পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও ওইসব এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কয়েক শত কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। ফকিরহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন
এলাকাবাসী জানায়, গুপিয়া নদীর জোয়ারে পানির চাপে জাহাজঘাটা এলাকায় একটি বেড়ি বাঁধের প্রায় ৩০ফুট জায়গা ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে যায়। এলাকাবাসীর চেষ্টা সত্তে¡ও পানির প্রবল চাপে বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এতে ওই সড়কের যোগাযোগ সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া লখপুর ইউনিয়নের কাহারডাঙ্গার তেমাথায় বেড়ীবাঁধটিও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জোয়ারের পানির চাপে এই বাঁধটিও যে কোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে।
জানা গেছে, বাগেরহাট পানি উন্নয়ন র্বোড প্রায় এক যুগ আগে ছোট্ট খাজুরা এলাকার তেমাথা মোড় হতে ১০ নং ¯øুইস গেটের উপর দিয়ে লখপুরের কাহারডাঙ্গা যুগীখালী নদীর পাড় দিয়ে একটি বেড়ীবাঁধ নির্মাণ করেন। ঐ একই সময়ে তেমাথা মোড় হতে জাবুসা বাজার পর্যন্ত অপর একটি বেড়ীবাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু রক্ষণা বেক্ষনের অভাবে বাঁধ দুইটি দুর্বল হয়ে যায়।
গত রবিবার ( ৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাঠাৎ করে তেমাথা মোড় হতে জাবুসা বাজার পর্যন্ত বেড়ীবাঁধের একটি বৃহৎ অংশ ভেঙ্গে গিয়ে সমগ্র এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। অপর বেড়ীবাঁধটিও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বেড়ীবাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শেখ আহম্মদ আলীর নেতৃত্বে দুই শতাধিক লোক স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় ৩শতাধিক বালুর বস্তা ফেলে বাঁধটি মেরামত করেন। কিন্তু রাতে জোয়ারের পানির চাপে আবার তা ভেঙ্গে যায়।
স্থানীয় চাষী আছাবুর শেখ, আলমগীর হোসেন, মোশারেফ হোসেন, সুরোত আলী, মিজান শেখ, শওকত আলী সহ অনেকে জানান, বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে জোয়ারের পানিতে বসতবাড়ির আঙ্গিনা ও ফসলী জমির রোপা আমন ধানের চারা পানিতে তলিয়ে গেছে। জোয়ারে লবনাক্ত পানি ঢুকে পড়ায় ধানের চারা নষ্ট হওয়াসহ মাটির স্থায়ী ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। ফলে পুণরায় বীজ লাগালেও ভাল ফসল ফলবে কিনা সে বিষয়ে সন্ধিহান কৃষকেরা।
এসময় কৃষকেরা বলেন, ‘সব সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড আগে থাকতে কোন ব্যবস্থা নেয় না। বাধ ভেঙে যাওয়ার পর মেরামত করতে আসে। ততক্ষণে আমাদের বিরাট ক্ষতি হয়ে যায়।’
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘জাহাজঘাটা এলাকায় ৩০ ফুটের মতো বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়েছে। আমরা সেটা মেরামত করার কাজ করছি। আশা করি দুই দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ মেরামত করতে পারবো।’